সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৬ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
আব্দুল্লাহ আল মামুন, খাগড়াছড়িঃ
খাগড়াছড়ি সদরের টংগীছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ কাজে নিম্ন মানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
গত অর্থ বছরে খাগড়াছড়ি সদর এলজিইডি’র কাজটি শুরু হলেও কয়েকমাস বন্ধ থাকার পর গত শুক্রবার থেকে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণের কাজ পুনরায় শুরু হয়। দীর্ঘদিন খোলামেলাভাবে পরে থাকায় সিমেন্টের গুণগত মান নষ্ট হয়ে যায়। বিদ্যালয়ের সভাপতি সিমেন্ট পরিবর্তনের জন্য ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীকে অনুরোধ জানান। কিন্তু কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। সরেজমিনে রবিবার(১২ নভেম্বর) বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সিমেন্টের বস্তা শক্ত পাথরে পরিণত হয়েছে। প্রায় সকল বস্তার সিমেন্ট জমাট বেঁধে গেছে। লাঠি ও বেলচা দিয়ে পিটিয়ে জমাট ভেঙ্গে সেই নষ্ট সিমেন্ট দিয়েই নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ঠিকাদারের লোকজন। বিদ্যালয়ের ভূমি দাতা সন্তু বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, সিমেন্ট গুলি দলা দলা হয়ে গেছে। বেলচা দিয়ে ভেঙে ওই সিমেন্ট দিয়ে ওয়ালের কাজ করলে আমি সভাপতিকে জানাই। সভাপতি ইঞ্জিনিয়ারকে জানালেও এভাবেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যালয়ের সভাপতি কনক বরন ত্রিপুরা বলেন, নষ্ট সিমেন্ট দিয়ে কাজ করায় উপজেলা প্রকৌশলীর নিকট অভিযোগ দিয়েছিলাম। তিনি সিমেন্টের মেয়াদ আছে বলে দায়সারা জবাব দিয়েছেন। অথচ সিমেন্ট গুলো শক্ত হয়ে পাথরের মতো হয়ে গেছে। নির্মাণ কাজের মিস্ত্রি খবিরঞ্জন ত্রিপুরা বলেন, সিমেন্ট আনার পর কয়েক মাস কাজ বন্ধ ছিল। তাই সিমেন্ট বস্তাগুলো খোলাভাবে পড়ে থাকায় কিছু সিমেন্ট নষ্ট হয়েছে। বস্তা খুলে শক্ত দলা গুলো ফেলে দিয়ে ভাল সিমেন্ট দিয়ে কাজ চালাচ্ছি। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার রশেদ কমিশনার বলেন, যে সিমেন্ট গুলো জমে পাথর হয়ে গেছে তা কি আপনারা পরীক্ষা করেছেন? আর অফিস কাজ বন্ধ করে নাই। ভাই নিউজ টিউজ বাদ দিয়ে সন্ধ্যায় একটু চা খাইতে আসেন কথা বলবো। খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা এলজিইডি’র প্রকৌশলী রাজু আহমেদ বলেন, কোন অর্থ বছরের কাজ এবং নির্মাণ ব্যয় কত, কোন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজ তা আমার জানা নেই। এ বিষয়ে উপ-সহকারী প্রকৌশলী জানেন। এ ব্যাপারে উপ-সহকারী প্রকৌশলী সহরাজ চৌধুরী বলেন, সিমেন্টের গুণগত মান নষ্ট হওয়ায় বিদ্যালয়ের সভাপতির কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে আমি শনিবার বিকাল ৫টায় গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়ে আসি। নতুন সিমেন্ট এনে আমাদেরকে অবগত করে পুনরায় কাজ শুরু করার জন্য ঠিকাদারকে অনুরোধ করা হয়েছে। নিষেধ সত্বেও ঠিকাদার কেন নষ্ট সিমেন্ট দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে তা আমাদের বোধগম্য নয়। তাছাড়া এলাকাটি দূর্গম, সব সময় আমাদের সেখানে যাওয়া সম্ভব হয় না।
উল্লেখ্য, খাগড়াছড়ি জেলা সদর উপজেলা এলজিইডি কর্তৃক ২০২২-২০২৩অর্থ বছরের টংগীছড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজটি খাগড়াছড়ি সদরের ইমরান এন্টারপ্রাইজ নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায়। যার মালিক হাজী এটিএম রাশেদ উদ্দিন (রাশেদ কমিশনার)। সরেজমিন তথ্য সংগ্রহকালে দায়িত্ব প্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী, কার্যসহকারী এমনকি অফিসের কোন প্রতিনিধিকে দেখা যায়নি। এদিকে, নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত ইট, বালু ও ইটের খোয়া নিম্ন মানের দেখা গেছে।